Home » দীর্ঘ সময় পার হলেও পেনশন না মেলায় স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন অবসরপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষকের

দীর্ঘ সময় পার হলেও পেনশন না মেলায় স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন অবসরপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষকের

দিবাকর দাস, হাকীকত নিউজ, নদিয়া:  দীর্ঘদিন আবেদন করা সত্বেও পেনশন, বাকোয়া পিএফ,গ্রাচুইটি না মেলার অভিযোগে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন অসহায় অবসরপ্রাপ্ত এক প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরের এক কোনায় প্রহর গুনছেন। স্বেচ্ছামৃত্যু চাওয়া অবসরপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষকের নাম ঘনশ্যাম সাহা রায়। তার বর্তমান শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে ঠিক ভাবে দাঁড়াতেও পারছেন না। দীর্ঘ চার মাস ধরে হাসপাতাল চত্বরে পরে থাকলেও হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তিও করেনি বলে অভিযোগ। চার মাস যাবত ওই শিক্ষককে দুবেলা খাবার জুটিয়ে চলেছেন হাসপাতালে কর্মরত এক ওয়ার্ড মাস্টার থেকে নিরাপত্তা কর্মীরা। এদিন খবর পেয়ে অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের ছোট বোন অনিতা রায় সাহা দাদাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করতে যান। কিন্তু তাকে হাসপাতালের সুপার পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেন পরিচ্ছন্ন অবস্থায় নিয়ে এলে তবেই ভর্তি করা হবে। এরপরই তিনশো টাকার বিনিময়ে এক সুইপারকে দিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ঘনশ্যাম বাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা যায়, নবদ্বীপ পৌরসভার ১৬ নং ওয়ার্ডের হরিজনপল্লী উদ্বাস্তু কলোনী জি এস এফ প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন ঘনশ্যাম সাহা রায়। ঘনশ্যাম বাবু জানান , ১৯৯৭ সালে তাকে পারিবারিক অশান্তির কারণে স্কুল থেকে অন্যায়ভাবে সাসপেন্ড করা হয়। এরপর সাসপেন্ড অবস্থাতেই তিনি ২০১৩ সালের মে মাসে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর এক এক করে কেটে গেছে সাতটি বছর। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও পেনশন, বাকোয়া পিএফ বা গ্রাচুইটি কিছুই পাননি। এবিষয়ে তিনি নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব ইন্সপেক্টরের কাছে অবসর সংক্রান্ত বাকোয়া অর্থ প্রদানের আবেদনও জানান। কিন্ত মেলেনি কোনও পেনশন বা গ্রাচুইটি। বিষয়টি নজরে আনতে নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল ঘনশ্যাম বাবুর বিষয়ে চিঠি পাঠায় নবদ্বীপ আরবান সার্কেলের সাব ইন্সপেক্টর,জেলা স্কুল পরিদর্শক ও অন্যান্য অফিসে। এতকিছু করেও পেনশন বা পিএফ কিছুই মেলেনি ৬৭ বছরের ঘনশ্যাম বাবুর। বর্তমানে আর্থিকভাবে অসহায় ও শারীরিক অসুস্থ অবস্থায় নবদ্বীপ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি ২০১৩ সালে অবসর গ্রহণ করি। পেনশনের আবেদন করার পর চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েও সব আটকে যায়। বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দা ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানাচ্ছি”।

স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন অবসরপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষকের
স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন অবসরপ্রাপ্ত এক প্রধান শিক্ষকের